পদার্থবিজ্ঞান অবশ্যই একটি ইন্টারেস্টিং সাবজেক্ট তোমাদের বেশিরভাগের কাছেই। এখানে তোমরা এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষার থিওরি আর ম্যাথ মিলিয়ে নতুন এক জগতে প্রবেশ করো, যেখানে তোমার কাছে অনেক সুযোগ থাকে তোমার সৃজনশীলতা প্রকাশ করার। অনেকেই পদার্থবিজ্ঞান বিষয়টিকে একটু ভয় পাও। সব থিওরিরই সুন্দর ব্যাখ্যা রয়েছে, যা তোমাকে সাহায্য করবে এই বিষয়ের গানিতিক সমস্যা সমাধান করতে এবং পদার্থবিজ্ঞানকে ভালোবাসতে। আর তোমাদের এই কোর্সকে আরো সহজ করতে ‘শিখো’ নিয়ে এসেছে এস.এস.সি. পদার্থবিজ্ঞান কোর্স।
এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষার মার্ক ডিস্ট্রিবিউশন কেমন হয়?
পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষা টোটাল ১০০ মার্কের হবে। যার মধ্যে তিনটি অংশ থাকবে-
- সৃজনশীল (৫০ মার্ক)
- নৈর্ব্যক্তিক (২৫ মার্ক)
- ব্যাবহারিক (২৫ মার্ক)
সৃজনশীল অংশ-
- প্রশ্ন থাকবে ৮ টি
- উত্তর করতে হবে ৫ টি
- প্রতি প্রশ্নে ১০ মার্ক
নৈর্ব্যক্তিক অংশ-
- প্রশ্ন থাকবে ২৫ টি
- উত্তর করতে হবে ২৫ টি
- প্রতি প্রশ্নে ১ মার্ক
ব্যবহারিক-
- একটি ব্যবহারিক পরীক্ষণ থাকবে যার মার্ক ১৫
- মৌখিক পরীক্ষা হবে যার মার্ক ৫
- ব্যবহারিক খাতা যার মার্ক ৫
প্রশ্নের ধরণ | নম্বর |
সৃজনশীল অংশ | ৫০ |
বহুনির্বাচনি অংশ | ২৫ |
ব্যবহারিক অংশ | ২৫ |
মোট | ১০০ |
এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান পরিক্ষায় কোন ধরনের প্রশ্ন আসে?
সৃজনশীল অংশ
- জ্ঞান
- অনুধাবন
- প্রয়োগ
- উচ্চতর দক্ষতা
জ্ঞান স্তর
- বই থেকে সরাসরি প্রশ্ন থাকবে।
- এক লাইনে উত্তর করার মত প্রশ্ন থাকবে।
- ‘কি’, ‘কে’, ‘কোথায়’, ‘কেন’ ইত্যাদি প্রশ্নবোধক শব্দ দিয়ে প্রশ্ন করা হবে।
অনুধাবন স্তর
- টপিক বই থেকে সরাসরি থাকবে, কিন্তু বুঝে উত্তর দিতে হবে।
- ‘ব্যাখ্যা’, ‘কারণ’, ‘উদাহরণ’ ইত্যাদি দিতে বলবে।
প্রয়োগ স্তর
- গাণিতিক সমস্যাটি সমাধান কর।
- প্রদত্ত তথ্য থেকে একটি গ্রাফ বা চিত্র আঁক।
উচ্চতর দক্ষতা স্তর
- বিচার-বিশ্লেষণ করা
- বিশ্লেষণের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে সমস্যার সমাধান করা
বহুনির্বাচনি অংশ
- সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
- বহুপদী সমাপ্তিসূচক প্রশ্ন
- অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
- সরাসরি প্রশ্ন থাকবে
- একক, মাত্রা, এক কথার তথ্য থাকবে
বহুপদী সমাপ্তিসূচক প্রশ্ন
- অসম্পূর্ণ বাক্য আকারে থাকে
- এক বা একাধিক উত্তর হতে পারে
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন
- উদ্দীপক থাকবে
- একটি সাধারণ বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে
- আরেকটি অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন থাকবে
এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ব্যবহারিক অংশ
- তোমার স্কুলে করা এক্সপেরিমেন্ট থেকে একটা এক্সপেরিমেন্ট করতে হবে।
- এক্সপেরিমেন্ট ও বইয়ের বেসিক ধারণার উপর তোমার মৌখিক পরীক্ষা হবে।
- তোমার স্কুলে করা এক্সপেরিমেন্ট এর খাতাটি জমা দিতে হবে।
এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষার সময় নির্বাচন:
সৃজনশীল অংশ
- সবগুলো প্রশ্ন একবার পড়ে নিবে।
- যে সকল প্রশ্নের উত্তর করবে, তা মার্ক করে নিবে।
- যেসব প্রশ্ন নিয়ে কোনো কনফিউশন নেই, সেই প্রশ্ন আগে উত্তর করবে।
- যে প্রশ্ন নিয়ে বেশি ভাবতে হয়, সেটি পরে উত্তর করবে।
- চিত্র আঁকার জন্য হাতে সময় রাখবে।
বহুনির্বাচনি অংশ
- সরাসরি প্রশ্ন থাকলে, সেগুলো আগে উত্তর করবে।
- যেসব প্রশ্নে ম্যাথ থাকবে, সেগুলো একবার না পারলে শেষের জন্য রেখে দিবে।
- একটি প্রশ্ন না পারলে সেটি নিয়ে বসে না থেকে পরের প্রশ্নে চলে যাবে।
ব্যাবহারিক অংশ
- তোমার এক্সপেরিমেন্ট থেকে পাওয়া ডাটাগুলো বসাতে ভুল করবে না।
- অপ্রয়োজনীয় কোনো তথ্য ব্যবহারিক পরীক্ষার সময় লিখবে না।
কীভাবে এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে?
তুমি যদি ক্লাস নাইনের স্টুডেন্ট হও, তাহলে যেভাবে প্রস্তুতি নিবে-
- সবার আগে বেসিক ধারণাগুলো পরিষ্কার করে নিবে।
- প্রতিটি চ্যাপ্টার অনেক সময় নিয়ে পড়বে। কারণ ক্লাস নাইনে সাধারণত সিলেবাস ও প্রেশার একটু কম থাকে। এখানে যদি বেসিক কনসেপ্ট-এ তোমার কোনো সমস্যা না থাকে, তাহলে দশম শ্রেনীতে তা তোমাকে অনেক সাহায্য করবে।
- বেশি বেশি ম্যাথমেটিক্যাল প্রবলেম প্র্যাকটিস করবে, কারণ ফিজিক্সের ক্ষেত্রে ভালো প্রবলেম সলভিং স্কিল ডেভেলপ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- প্রথম দিকের চ্যাপ্টার, যেমন: গতি, বল, কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি – এই চ্যাপ্টারগুলো একে অপরের সাথে ভালোমতো কানেক্টেড। আর এই চ্যাপ্টার থেকে অনেক প্রশ্ন আসে পরীক্ষায়, তাই এই অধ্যায়গুলো খুব ভালোমতো বুঝে পড়ার চেষ্টা করবে।
- যেসব টপিকের সাথে গাণিতিক সমস্যা থাকবে, সেই টপিক শেষ করে সাথে সাথে সমস্যাগুলো করা শুরু করে দিবে।
- নিজেকে যাচাই করার জন্য শিখোর টেস্ট-এক্সাম গুলো দিতে পারো, এতে তোমার প্র্যাকটিসের আউটকাম তুমি নিজেই বুঝতে পারবে।
তুমি যদি ক্লাস টেনের স্টুডেন্ট হও, তাহলে যেভাবে এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবে-
- বিগত বছরের এস.এস.সি পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো সল্ভ করতে থাকবে।
- তোমার প্র্যাকটিসের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিবে।
- যে প্রবলেমগুলো একাধিক চ্যাপ্টার মিলিয়ে বানানো, সেগুলো বেশি বেশি সল্ভ করবে। কারণ তোমার বোর্ড পরীক্ষা পুরো বইয়ের উপর হবে।
- বইয়ের বিভিন্ন সংজ্ঞা, একক, মাত্রা এগুলো বারবার পড়বে ও কিভাবে আসে – তা প্র্যাকটিস করবে।
- নিজের বন্ধুদের সাথে গ্রুপ ডিস্কাশনের সাহায্যে বিভিন্ন জটিল প্রবলেমগুলো সল্ভ করতে পারো, এতে তুমি বোর্ড পরীক্ষায় ভালো করার পাশাপাশি বিভিন্ন ফিজিক্স অলিম্পিয়াড-এও ভালো একটা ফল করতে পারবে।
চালিয়ে যাও এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষার প্রস্তুতি
পরীক্ষায় ভালো করার জন্য বইয়ের প্রত্যেকটি অধ্যায়ের পুরো অংশ ভালো মতো নিয়মিত সময় নিয়ে পড়তে হবে। সূত্রগুলো কিভাবে এলো তা নিয়ে ভাবতে হবে এবং সূত্র ডেরাইভ করার প্র্যাকটিস নিজে নিজে করতে হবে। এতে করে ম্যাথ সল্ভ করার জন্য সূত্র মুখস্থ করতে হবে না। এক চ্যাপ্টারের সাথে অন্য চ্যাপ্টারের কি কানেকশন আছে – তা খুঁজে বের করবে। যত বেশি পারো বিগত বছরের বোর্ড পরীক্ষায় আসা প্রশ্ন, বিভিন্ন স্কুলের আগের বছরগুলোর প্রশ্ন সমাধান করবে। মনে রাখবে, তোমার যদি ফিজিক্সের বিভিন্ন ফর্মূলা মুখস্থ না করে, সেগুলো কিভাবে এলো সেই ধারণা থাকে – তাহলে তুমি ফিজিক্সের পরীক্ষায় অবশ্যই সব গাণিতিক প্রশ্ন খুব সহজেই সল্ভ করতে পারবে।