গ্লুকোজ (Glucose, C6H12O6):
গ্লুকোজ একটি উল্লেখযোগ্য মনোস্যাকারাইড। উদ্ভিদ কোষে দ্রবণীয় অবস্থায় একে পাওয়া যায়। এটি একটি অ্যালডোহেক্সোজ কারণ এতে অ্যালডিহাইড গ্রুপ (-CHO) আছে। সেইসাথে এটি একটি রিডিউসিং শ্যুগার বা বিজারণক্ষম শর্করা। বিভিন্ন প্রকার পাকা ফল ও মধুতে প্রচুর গ্লুকোজ থাকে। পাকা আঙ্গুরে গ্লুকোজের পরিমাণ শতকরা ১২-৩০ ভাগ। একে অনেক সময় গ্রেইপ শুগার (grape sugar) বা আঙ্গুরের শর্করা বলা হয়।
গ্লুকোজ উৎপাদন ও প্রস্তুত প্রণালিঃ
প্রকৃতিতে সবুজ উদ্ভিদ থেকে গ্লুকোজ উৎপাদিত হয়। আবার গবেষণাগারে হাইড্রোলাইসিস করে সুকরোজ ও স্টার্চ থেকে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ প্রস্তুত করা যায়।
গ্লুকোজের বৈশিষ্ট্যঃ
- গ্লুকোজ সাদা দানাদার পদার্থ
- গ্লুকোজ স্বাদে মিষ্টি এবং পানিতে সহজেই দ্রবণীয়
- গ্লুকোজ অ্যালকোহলে সামান্য দ্রবণীয় কিন্তু ইথারে অদ্রবণীয়
গ্লুকোজের ব্যবহারঃ
(i) রোগীর পথ্য হিসেবে গ্লুকোজ-এর বহুল ব্যবহার প্রচলিত
(ii) এটি রোগীকে দ্রুত শক্তি যোগায়
(iii) বিভিন্ন ফল সংরক্ষণে গুকোজ ব্যবহার করা হয়
(iv) ক্যালসিয়াম গ্লুকোনেট হিসেবে ওষুধ শিল্পে গ্লু কোজ ব্যবহৃত হয়
(v) ভিটামিন ‘সি’ তৈরি করার জন্য গ্লুকোজ ব্যবহৃত হয়
(vi) গ্লুকোজ সরবিটল তৈরি ও গ্লাইকোলাইসিসে ব্যবহৃত হয়
(vii) গ্লুকোজ কার্বোহাইড্রেট বিপাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
গ্লুকোজের রিং স্ট্রাক্চার এবং α/β -D গ্লুকোজঃ
- গ্লুকোজের ১নং কার্বন এবং ৫নং কার্বন কাছাকাছি এলে (দ্রবণে সাধারণত কাছাকাছি আসে) এদের মধ্যে একটি অক্সিজেন সেতু তৈরি হয়
- এর ফলে ১নং কার্বনে একটি হাইড্রোক্সিল গ্রুপ (-OH) গ্রুপ সৃষ্টি হয়
- নতুন সৃষ্ট এই হাইড্রোক্সিল গ্রুপ (-OH) গ্রুপ ১নং কার্বনের α (আলফা) অথবা β (বিটা) অবস্থানে থাকতে পারে
- -OH গ্রুপের এই α এবং β অবস্থানের কারণে গ্লুকোজের ভৌত, রাসায়নিক এবং জৈবিক বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটে