data transmission mode

ডেটা ট্রান্সমিশন মোড

উৎস থেকে গন্তব্যে ডেটা পাঠানোর বেশ কয়েকটি পদ্ধতি আছে। ডেটা পাঠানোর উপায়ের উপর ভিত্তি করে আমরা ডেটা ট্রান্সমিশনকে ২টি ভাগে ভাগ করতে পারি:

  • প্যারালাল মোড এবং 
  • সিরিয়াল মোড

প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন: একসাথে সমান্তরাল লাইনে ডেটা পাঠানোকে প্যারালাল ট্রান্সমিশন বলে। অর্থাৎ, প্রেরক ও প্রাপকের মধ্যে সমান্তরালভাবে ডেটা চলাচল করলে, তাকে সমান্তরাল বা প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন বলে।

এখন চলো প্যারালাল ট্রান্সমিশনের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নেই।

সুবিধা:

  • একসাথে অনেক বেশি ডেটা বা তথ্য পাঠানো যায়।

অসুবিধা:

  • খরচ বেশী হয়।

সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন: একটি সিঙ্গেল লাইনে এক বিট করে ডেটা পাঠানোকে আমরা সিরিয়াল ট্রান্সমিশন বলি। অর্থাৎ, প্রেরক ও প্রাপকের মধ্যে অনুক্রমে বা ধারাবাহিকভাবে একটি বিটের পর অপর একটি বিট চলাচল করলে তাকে অনুক্রম বা সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন বলে।

এখন চলো সিরিয়াল ট্রান্সমিশনের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নেই।

সুবিধা:

  • খরচ তুলনামূলক কম হয়ে থাকে।

অসুবিধা:

  • অনেক ধীরগতির হয়ে থাকে।

সিরিয়াল ট্রান্সমিশন মোড আবার ৩ প্রকার যা হলো:

  1. এসিনক্রোনাস 
  2. সিনক্রোনাস 
  3. আইসোক্রোনাস

এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন: এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে একটি ক্যারেক্টার করে ট্রান্সমিট হয়। যেমন Shikho শব্দের S h i ইত্যাদি একটি একটি করে এখানে ট্রান্সমিট হবে। এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন সাধারনত প্রিন্টার কিংবা কীবোর্ডে ডেটা ট্রান্সফারের জন্য ব্যবহার করা হয়।

এবার এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানা যাক।

সুবিধা:

  • যেকোনো সময় প্রেরক ডেটা পাঠাতে পারবে ও প্রাপক নিতে পারবে।
  • আলাদা প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসের প্রয়োজন হয় না।
  • খরচ কম।
  • অল্প ডেটা পাঠাতে বেশি কার্যকর।

অসুবিধা:

  • তুলনামূলক ধীরগতির।
  • সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের তুলনায় এটি কম কার্যকর।
  • ডেটা ট্রান্সফার বন্ধ থাকলে খরচ বেড়ে যায়।

সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন: সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন সাধারনত, কম্পিউটার টু ফোন অথবা অন্য ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের সাথে ডেটা কমিউনিকেশনে ব্যাবহার করা হয় কিংবা দূরবর্তী স্থানে ডেটা পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। 

এবার সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো জানা যাক।

সুবিধা:

  • এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের তুলনায় বেশি কার্যকর।
  • ডেটা ট্রান্সফারের গতি বেশি।
  • অতিরিক্ত স্টার্ট ও স্টপ বিটের প্রয়োজন নাই।

অসুবিধা:

  • অতিরিক্ত স্টোরেজ ডিভাইসের প্রয়োজন হয়।
  • খরচ বেশি।

আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন: সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন ও এসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের এক প্রকার সংমিশ্রনই হলো আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন। আইসোক্রোনাস, সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের উন্নত ভার্সন যেখানে দুই গ্রুপের মাঝে বিরতি প্রায় শূন্য ধরা হয়। 

এই ট্রান্সমিশনের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো জেনে আসি এবার।

সুবিধা:

  • আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশনের বাকি দুই মোড থেকে বেশী গতিসম্পন্ন।

অসুবিধা:

  • খরচ বেশি।

আবার ডেটা পাঠানোর দিকের উপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশনকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

  • সিমপ্লেক্স মোড
  • হাফ ডুপ্লেক্স মোড
  • ফুল ডুপ্লেক্স

সিমপ্লেক্স মোড: ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র একদিকে ডেটা প্রেরণের মোডকে সিমপ্লেক্স বলে। সিমপ্লেক্স মোড ঠিক এভাবেই কাজ করে যেখানে শুধু সেন্ডার ছাড়া অন্য কেউ ডেটা পাঠাতে পারে না এবং ডেটার ট্রান্সফার কেবল একদিকে হয়ে থাকে। টেলিভিশন এবং রেডিও ব্রডকাস্ট এর অন্যতম উদাহরণ।

হাফ ডুপ্লেক্স মোড: যে ব্যবস্থায় ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে উভয় দিক থেকে ডেটা প্রেরণ করা যায় তবে তা একই সময়ে সম্ভব নয় তাকে হাফ ডুপ্লেক্স বলা হয়। হাফ ডুপ্লেক্স সিস্টেমে ডেটা পাঠানো সময় প্রেরকের সম্পূর্ণ ডেটা পাঠানোর আগ পর্যন্ত অন্য কেউ ডেটা পাঠাতে পারে না। এমনকি ডেটা পাঠানো অবস্থায় প্রেরক ডেটা গ্রহণও করতে পারবে না। হাফ ডুপ্লেক্স সিস্টেমের উদাহরণ হচ্ছে ওয়াকি টকি।

ফুল ডুপ্লেক্স মোড: যে ব্যবস্থায় ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে উভয় দিক থেকে ডেটা প্রেরণ করা যায় এবং তা একই সময়ে সম্ভব তাকে ফুল ডুপ্লেক্স বলা হয়। অর্থাৎ, ফুল ডুপ্লেক্স মোডে প্রেরক ও প্রাপক একই সাথে ডেটা পাঠাতে ও গ্রহণ করতে পারে। আমরা মোবাইল ফোনে কথা বলতে ফুল ডুপ্লেক্স মোড ব্যবহার করি।

ডেটা আদান প্রদানে, প্রেরক ও প্রাপকের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশোন কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:

  • ইউনিকাস্ট
  • ব্রডকাস্ট
  • মাল্টিকাস্ট

ইউনিকাস্ট: যে ব্যবস্থায় একটি প্রেরক থেকে এবং শুধুমাত্র একটি প্রাপকই ডেটা গ্রহণ করতে পারে, তাকে ইউনিকাস্ট বলে। এখানে অনেক প্রাপক একসাথে ডেটা গ্রহণ করতে পারে না। অর্থাৎ, একজন করে প্রেরক ও প্রাপক থাকার সিস্টেমকে ইউনিকাস্ট বলা হয়। একটি কম্পিউটার থেকে আরেক কম্পিউটারে বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে নিজেদের মধ্যে ডেটা আদান প্রদান করাই হলো ইউনিকাস্টের উদাহরণ।

ব্রডকাস্ট: যে মোডে নেটওয়ার্কের কোন একটি নোড (কম্পিউটার, প্রিন্টার বা অন্য কোন যন্ত্রপাতি) থেকে ডেটা প্রেরণ করলে তা নেটওয়ার্কের অধীনস্ত সবল নোড-ই গ্রহণ করে তাকে ব্রডকাস্ট মোড বলে। একটি টিভি চ্যানেল যখন তাদের কেন্দ্র থেকে সম্প্রচার করে তখন সেটি নেটওয়ার্কের অধীনস্ত সবার জন্য ব্রডকাস্টিং এর মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়।

মাল্টিকাস্ট: যে মোডে নেটওয়ার্কের কোন একটি নোড (কম্পিউটার, প্রিন্টার বা অন্য কোন যন্ত্রপাতি) থেকে ডেটা প্রেরণ করলে তা নেটওয়ার্কের অধীনস্ত সবল নোড-ই গ্রহণ না করে নির্দিষ্ট কয়েকটি নোড গ্রহণ করে তাকে মাল্টিকাস্ট মোড বলে। গুগল মিট কিংবা জুম মিটিং হলো মাল্টিকাস্টের উদাহরণ যেখানে অনুমতি সাপেক্ষে নির্দিষ্ট কিছু মানুষ মিটিং এ অংশ নিতে পারে।

আজ তাহলে তোমরা ডেটা ট্রান্সমিশন মোড সম্পর্কে জানতে পেরেছো।

শেয়ার:

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 5 =