কো-এক্সিয়াল ক্যাবল তৈরি করতে প্রয়োজন হয় দুটি তড়িৎ পরিবাহী এবং দুটি তড়িৎ পরিবাহী স্তর। একই অক্ষ বরাবর দুটি তড়িৎ পরিবাহী স্তর এই ক্যাবলে থাকে বলে একে কো-এক্সিয়াল ক্যাবল বলা হয়ে থাকে। কো-এক্সিয়াল ক্যাবলের ভেতরের তড়িৎ পরিবাহী তারটি কপার ওয়্যার দ্বারা তৈরি যার মধ্য দিয়ে তড়িৎ সিগন্যাল প্রবাহিত হয়।ভেতর এবং বাইরের পরিবাহী তারকে আলাদা বা পৃথক রাখার জন্য এদের মাঝে ফোমের ইন্সুলেশন ব্যবহার করা হয় অন্তরক পদার্থ হিসেবে। তাছাড়া প্লাস্টিকের জ্যাকেট দ্বারা বাইরের পরিবাহী তারকে আবৃত বা ঢেকে রাখা হয়।
কো-এক্সিয়েল ক্যাবলের বিভিন্ন অংশ সমূহ:
- কপার ওয়্যার: এর মধ্য দিয়ে ডেটা প্রবাহিত হয়।
- ফোমের ইনসুলেশন: কপার ওয়্যার যাতে বেঁকে বা কুঁচকে না যায় সেজন্য ব্যবহৃত হয়।
- কপার মেস: বাইরের তাপ, চাপ ও EMI থেকে কপার ওয়্যারকে রক্ষা করে যাতে নির্বিঘ্নে ডেটা চলাচল করতে পারে অর্থাৎ ইহা ভিতরের তারে প্রেরিত উপাত্ত সিগনালের ব্যাতিচার রোধ করে।
- আউট সাইড ইনসুলেশন: তার যাতে বাহিরের আঘাতে নষ্ট না হয়ে যায় সেজন্য প্ল্যাস্টিকের জ্যাকেট ব্যবহৃত হয়।
কো-এক্সিয়েল ক্যাবলের প্রকারভেদ:
কো-এক্সিয়েল ক্যাবল দুই প্রকার। যথা:
- থিননেট (Thinnet):
পুরুত্ব: ০.২৫ ইঞ্চি
ট্রান্সমিশন ডিসটেন্স: ১৮৫ মিটার (রিপিটার ছাড়া)
ট্রান্সমিশন স্পীড: ১০Mbps
- থিকনেট (Thicknet):
পুরুত্ব: ০.৫ ইঞ্চি
ট্রান্সমিশন ডিসটেন্স: 500 মিটার(রিপিটার ছাড়া)
ট্রান্সমিশন স্পীড: ১০Mbps
কো-এক্সিয়াল ক্যাবেলের সুবিধাসমূহ:
১। এই ধরনের ক্যাবলের ট্রান্সমিশন লস অপেক্ষাকৃত কম হয়।
২। এই ক্যাবলে ডেটা স্থানান্তরের গতি বেশি।
৩। এনালগ ও ডিজিটাল উভয় ডেটা ট্রান্সমিশন-এর ক্ষেত্রে এ ক্যাবলটি ব্যবহৃত হয়।
৪। এটি ফাইবার অপটিক ক্যাবল-এর তুলনায় কম ব্যয়বহুল এবং সহজে বহনযোগ্য।
৫। এ ক্যাবলের মাধ্যমে অধিক দূরত্বে তথ্য পাঠানো যায়।
কো-এক্সিয়াল ক্যাবলের অসুবিধাসমূহ:
১। ডেটা ট্রান্সফার রেট নির্ভর করে তারের দৈর্ঘ্যের উপর।
২। কো-এক্সিয়াল ক্যাবল টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল অপেক্ষা কিছুটা ব্যয়বহুল।
কো-এক্সিয়াল ক্যাবলের ব্যবহার:
১। টেলিভিশন নেটওয়ার্ক
২। ডিশ টিভি বা ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক
৩। সিসি টিভি নেটওয়ার্ক
৪। লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে বহুল ব্যবহৃত হয়।