আমরা এর আগে জেনেছি পরমাণুর কণিকা ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন সম্পর্কে। আমরা পারমাণবিক সংখ্যা ও ভরসংখ্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো
পারমাণবিক সংখ্যা:
কোন মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যাকে ,ঐ মৌলটির পারমাণবিক সংখ্যা বলে।
পারমাণবিক সংখ্যা = Z
সোডিয়াম পরমাণুর নিউক্লিয়াসে মোট ১১ টি প্রোটন আছে তাহলে এর পারমাণবিক সংখ্যা হবে ১১। আবার অক্সিজেন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে মোট ৮টি প্রোটন আছে। তাহলে এর পারমাণবিক সংখ্যা হবে ৮। একই ভাবে ম্যাগনেসিয়াম , ক্লোরিন, ক্যালসিয়াম, ইউরেনিয়ামের প্রোটন সংখ্যা যথাক্রমে ১২, ১৭, ২০ এবং ৯২। তাই
ম্যাগনেসিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা 12
ক্লোরিনের পারমাণবিক সংখ্যা 17
ক্যালসিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা 20
ইউরেনিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা 92
কখন পারমাণবিক সংখ্যাও ইলেকট্রন সংখ্যার সমান হয়ে থাকে?
চার্জ নিরপেক্ষ পরমাণুতে, ধনাত্মক চার্জ যুক্ত প্রোটন সংখ্যা ও ঋণাত্মক চার্জ যুক্ত ইলেকট্রন সংখ্যা সমান থাকে। আর আমরা জানি পরমাণুতে থাকা মোট প্রোটন সংখ্যাকে ঐ পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা বলে। তাই তখন ঐ পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যাও ইলেকট্রন সংখ্যার সমান হয়ে থাকে।
পারমাণবিক সংখ্যা জানা প্রয়োজন
মৌলের পারমাণবিক ধর্ম এর পারমাণবিক সংখ্যার উপর নির্ভরশীল। আর দুটি মৌলের পারমাণবিক ধর্ম কখনো এক হতে পারে না। প্রত্যেক মৌলেরই নিজস্ব কিছু ধর্ম আছে। পারমাণবিক ধর্ম গুলো হল –
- ধাতব ধর্ম
- অধাতব ধর্ম
- পারমাণবিক ব্যাসার্ধ
- আয়নীকরণ শক্তি
- ইলেকট্রন আসক্তি
- তড়িৎ ঋণাত্মকতা
ভর সংখ্যা বা নিউক্লিয়ন সংখ্যা
কোন মৌলের একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের মধ্যে অবস্থিত প্রোটন এবং নিউট্রনের মোট সংখ্যাকে ঐ মৌলের বা পরমাণুর ভরসংখ্যা বা নিউক্লিয়ন সংখ্যা বলে।
ভরসংখ্যা কে A দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
ভরসংখ্যা (A) = প্রোটন সংখ্যা (p) + নিউট্রন সংখ্যা (n) |
সোডিয়ামের ভর সংখ্যা = প্রোটন সংখ্যা (p) + নিউট্রন সংখ্যা (n)
= ১১+১২ = ২৩
মনে রাখবে, ভর সংখ্যা একটি পূর্ণ সংখ্যা। কারণ পরমাণুর মধ্যে থাকা প্রোটন এবং নিউট্রন সংখ্যা ভগ্নাংশ হতে পারেনা, এজন্য ভরসংখ্যা কখনো ভগ্নাংশ হয়না। তাই ভর সংখ্যা একটি পূর্ণ সংখ্যা।
মৌলের প্রতীকে পারমাণবিক সংখ্যা ভর সংখ্যা লেখার নিয়ম
কোন মৌলকে সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ করার জন্য, ঐ মৌলের প্রতীকের উপরে বাম পাশে কর্নারে থাকে ভর সংখ্যা। X পরমাণুর প্রতীক হলে লিখতে হবে এভাবে।
AX
এবং নিচে কর্নারে থাকে পারমাণবিক সংখ্যা।
zX
আবার কোন মৌলের ভরসংখ্যা ও পারমাণবিক সংখ্যা জানা থাকলে, তুমি সহজেই ঐ মৌলের নিউট্রন সংখ্যা বের করতে পারবে।
মৌলের ভরসংখ্যা থেকে পারমাণবিক সংখ্যা বিয়োগ করে নিউট্রন সংখ্যা পাওয়া যাবে।
নিউট্রন সংখ্যা n = ভরসংখ্যা (A) – পারমাণবিক সংখ্যা (Z)
তাহলে আমরা অক্সিজেনের নিউট্রন সংখ্যা= ভরসংখ্যা (A) – পারমাণবিক সংখ্যা (Z)
= 16-8
= 8
তারমানে, অক্সিজেনের ৮ টি নিউট্রন আছে।
কয়েকটি মৌলের ইলেকট্রন সংখ্যা, ভর সংখ্যা এবং নিউট্রন সংখ্যার চার্ট দেখে নাও
মৌলের প্রতীক | পারমাণবিক সংখ্যা Z | ভর সংখ্যা A | ইলেকট্রন সংখ্যা | নিউট্রন সংখ্যা A-Z | সংক্ষিপ্ত প্রকাশ |
H | 1 | 1 | 1 | 0 | H |
He | 2 | 4 | 2 | 2 | He |
O | 8 | 16 | 8 | 8 | O |
Na | 11 | 23 | 11 | 12 | Na |
এভাবে চেষ্টা করলে একই ভাবে তুমি সব মৌলের ভর সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে।